37.4 C
Gopālganj
শনিবার, জুন ২৮, ২০২৫

গোপালগঞ্জে ১৫ বছর ধরে পানিবন্দি, চাষাবাদ ব্যাহত

নির্বাচিত সংবাদ

মোহনা নিউজ :
মোহনা নিউজ :https://www.dainikmohona.com/
Dainik Mohona News Portal brings the latest news, updates, and events from Gopalganj city, Bangladesh. Stay informed with trusted local coverage.
- Advertisement -

স্টাফ রিপোর্টার।।

গোপালগঞ্জের ৩ টি গ্রামের অন্তত এক হাজার পরিবার দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন। সামান্য বৃষ্টিতে উঠানে পানি জমে। কি বর্ষা কি শুকনো সময়, সব সময়েই যেন একই রকম। এই এলাকার মানুষের কান্না যেন কেউ শুনতে পায় না। যদিও গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড বলেছে এ বিষয়ে প্রকল্প তৈরী করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের পর বাস্তবায়িত হলে এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের এ সমস্যা দূর হবে।

এই এলাকার মানষের বক্তব্য হলো- দীর্ঘ জলাবদ্ধতার কারণে তিন ফসলী জমিতে এখন ফসল ফলানোই দূরহ হয়ে পড়েছে। ওই সব গ্রামের পানি মাদারীপুর বিলরুট চ্যানেলে নামতে না পারায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে গয়লাকান্দি খালেরর উন্নয়ন ও উৎস মুখে একটি স্লুইচগেট নির্মানের দাবী করেছেন ওই তিন গ্রামের মানুষ।

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার গোহালা ইউনিয়নের গয়লাকান্দি, গঙ্গারামপুর ও খালিয়া গ্রাম। এই তিন গ্রামে হাজার খানেক পরিবার বসবাস করেন। ব্রিটিশ আমলে মাদারীপুর বিলরুট চ্যানেল খননের সময় গোপালগঞ্জ থেকে টেকেরহাট পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার বেড়ী বাধ নির্মাণ করা হয়। তখন গয়লাকান্দি খালের উৎসমুখ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে ওই তিন গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হতে থাকে। এসব গ্রামে এক সময় তিন ফসল হতো। পানি অপসারণের কোন ব্যবস্থা না থাকায় এখন সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। রাস্তাঘাট ও বাড়ীর উঠানে পানি জমে থাকে, চুলায় পানি উঠে যায়। এতে সীমাহীন দূর্ভোগের মধ্যে রযেছে ওই তিন গ্রামের লোকজন।

ওই এলাকার কৃষক মোঃ আবুল হোসেন (৫৫), মোঃ হারেজ মাতুব্বর (৬৫), এনজেল শেখ  (৬২), মোঃ  বশির শেখসহ (৭০) অনেকের সাথে কথা হয়। তারা জানান, আমাদের এই এলাকায় এক সময়ে তিন ফসল হতো। এখানকার পানি সরকারী খালের মধ্যদিয়ে নদীতে গিয়ে পড়তো। মাদারীপুর বিলরুট চ্যানেল খননের সময় গোপালগঞ্জ থেকে টেকেরহাট পর্যন্ত বেড়ী বাধ নির্মাণ করা হয়। তখন গয়লাকান্দি খালের উৎসমুখ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে আমরা তিন গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হতে থাকি। আগে এতটা জলাবদ্ধতা ছিলনা, পানি চলে যেত বিল এলাকায়। কিন্তু, বর্তমানে এলাকায় বাড়ি-ঘর রাস্তাঘাট, ইট ভাটা হওয়ার ফলে কোন দিকেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। যে কারনে সামান্য বৃষ্টিতেই আমাদের বাড়ির উঠানে, চুলায় পানি জমে। গয়লাকান্দি খালের উৎস মুখে একটি স্লুইচগেট নির্মাণ করলে এই জলাবদ্ধতার হাত থেকে আমরা রক্ষা পাবো। আমাদের এখানকার অনাবাদী জমিতে আবার ফলবে ফসল, ভালো থাকবো আমরা।

গোহালা ইউ,পি সদস্য নজরুল ইসলাম মাতুব্বর বলেছেন, আমার এই ওয়ার্ডের মানুষ দীর্ঘ বছর জলাবদ্ধতার সমস্যায় ভুগছ্।ে গয়লাকান্দি খালের উৎস মুখে একটি স্লুইচগেট নির্মাণ করার জন্য আমরা বার বার পানি উন্নয়ণ বোর্ডে লিখিত আবেদন করেছি, কোন কাজ হয়নি। এখানকার কৃষক ও বাসিন্দাদের দীর্ঘ বছরের এই সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি গয়লাকান্দি খালের উৎস মুখে একটি স্লুইচগেট নির্মানের দাবী জানিয়েছেন।

গোপালগঞ্জ জেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেছেন, আমি আমার মুকসুদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে দিয়ে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছি। ওই এলাকায় জলাব্ধতার কারনে গয়লাকান্দি, গঙ্গারামপুর, খালিয়ার প্রায় দু’শ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডর একটি খাল রয়েছে, কিন্তু পার্শ্ববর্তী মাদারীপুর বিলরুট চ্যানেলের বেড়ীবাধে একটি স্লুইচগেট না থাকায় নদীতে পানি নিষ্কাশন হচ্ছেনা এবং পানি প্রবেশও করতে পারছেনা। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেছি, স্লুইচগেট নির্মানের জন্য লিখিত অনুরোধ জানাবো। আশা করছি পানি উন্নয়ন বোর্ড অচিরেই স্লুইচগেট নির্মান করবে।

গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য বলেছেন, ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে একটি প্রকল্প তৈরী করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই প্রকল্পের মধ্যে এমবিআর চ্যানেলের বেড়ীবাধের গয়লাকান্দিতে স্লুইচগেট নির্মানের বিষয়টি রয়েছে। আশা করছি আমরা ওই এলাকায়  স্লুইচ গেট নির্মান করে বিষয়টি সমাধান করতে পারবো।

- Advertisement -

আরও খবর plus!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর

Translate »