বিনা টিকেটে ও ভিসায় প্লেনে উঠে বসা সেই জুনায়েদকে হয়তো আমরা ভুলেই গেছি। জুনায়েদ যেদিন সবার অলক্ষ্যে প্লেনে উঠে বসেছিল সেদিন সারা দেশ ব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়েছিল। দরিদ্র পরিবারের সন্তান জুনায়েদের শখ ছিল প্লেনে চড়ে আকাশ দেখবে। আকাশ ছোয়ার স্বপ্ন নিয়ে প্লেনে চড়ে ভেসে বেড়াবে নীল আকাশে। কিন্তু, শেষ মহুর্তে সেদিন আর তার আকাশে ওড়ার সখ পূরন হয়নি। শেষ পর্যন্ত প্লেনের কর্মচারীদের হাতে ধরা খেয়ে প্লেন থেকে তাকে নামিয়ে আনা হয়।স্বপ্ন ভগ্ন হয়ে বাড়িতে চলে আসতে হয় তাকে।
যদিও একটি প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে কক্সবাজারে প্লেনে করে নিয়ে যাওয়া হয়। তার স্বপ্ন পূরনের এক ধাপ পরিপূর্ন হয়। কিন্তু, সে সবার কাছে আরেকটি স্বপ্নের কথাও জানায়। সেটি হলো সে বড় হয়ে প্লেন চালাবে।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তার বাবার সাথে কোন এক বুধবার গনশুনানীর দিন জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করতে আসে জুনায়েদ। সেখানে তার ইচ্ছার কথা জানায় জেলা প্রশাসককে। তার বাড়ির সামনে একটি বাঁশের সাকো রয়েছে, সেখানে জনগনের পারাপারের জন্য একটি কাঠের সেতু বা ওয়াকওয়ে বানানোরও আবদার জানায় জুনায়েদ।
জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম তার স্বপ্ন পূরনের জন্য গোপালগঞ্জ শিশু পরিবারে তার ভর্তির ব্যবস্থা করে দেন এবং বাড়ির সামনে একটি ওয়াকওয়ে বা কাঠের সেতু তৈরী করে দেবার আশ্বাস দেন।
সে অনুযায়ী জেলা প্রশাসক মুকসুদপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেন জুনায়েদের বাড়ির সামনে বাঁশের সাকোর পরিবর্তে কাঠের সেতু নির্মান করে দেবার জন্য।সে নির্দেশনা অনুযায়ী মুকসুদপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাঠের সেতুটি নির্মান করে দিয়েছেন।
জুনায়েদের বাড়ির সামনে কাঠের সেতু নির্মান করে দিয়ে জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম তাঁর আরেকটি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করায় এলাকাবাসী খুশি।বিশেষ করে জুনায়েদ বেশী খুশি হয়েছে। কেননা জেলা প্রশাসক তাঁর কথায় সেতু নির্মান করে দিয়েছেন, এতে সে খুবই আনন্দিত। এলাকায় তাকে এখন খুব ভাল বাসছে। জুনায়েদ জানায়, জেলা প্রশাসক স্যার তার কথায় বাড়ির সামনে একটি সুন্দর কাঠের সেতু নির্মান করে দেয়ায় সে অবাক হয়েছে। এলাকার মানুষ যারা ওই সাকো ব্যবহার করে সাচ্ছন্দে যাতায়াত করতে পারছে,তারা জুনায়েদের প্রশংসায় পঞ্চমূখ। সেই সাথে এলাকার দীর্ঘদিনের খাল পারাপারের যে সমস্যায় লোকজন ভুগছিল তা থেকে রেহাই পেয়ে জেলা প্রশাসককে ধণ্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।