মোহনা রিপোর্ট।।
গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(বশেমুরবিপ্রবি) কম্পিউটার চুরির ঘটনায় তদন্ত কমিটি থেকে অব্যাহতি দেয়া ও নেয়ার নাটক শুরু হয়েছে। এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কম্পিউটার চুরির ঘটনা আদৌ কি প্রকাশ পাবে? তাহলে কি পূর্বের ন্যায় কম্পিউটার চুরির ঘটনার সাথে জড়িত রাঘব-বোয়ালরা কি ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে?
তদন্ত প্রতিবেদন জমা দানের শেষ দিন আজ বৃহস্পতিবার বেলা ৩ টার দিকে কম্পিউটার চুরির ঘটনায় গঠিত ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটির তিন নম্বর সদস্য প্রকৌশলী এস এম এস্কেন্দার আলী পদত্যাগ করেন। তিনি রেজিস্টার বরাবর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
এর আগে, গত ১৮ আগষ্ট গোপালগঞ্জ বশেমুরবিপ্রবি’র কম্পিউটার চুরির ঘটনায় গঠিত ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটির সদস্য পদ থেকে সহকারী রেজিষ্ট্রার মোঃ নজরুল ইসলামকে অব্যহতি দেয়া হয়। তিনি ওই তদন্ত কমিটির সর্বশেষ নম্বর সদস্য ছিলেন। কম্পিউটার চুরি বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মোঃ নূরউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে অব্যহতির আদেশ দেয়া হয়।
গত ৯ আগষ্ট এ বিষয়ে গঠিত ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটিকে ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। দুই দিন বাকী থাকতে তদন্ত কমিটির সদস্য সহকারী রেজিষ্ট্রার মোঃ নজরুল ইসলামকে অব্যহতি দেয়া হয়। তদন্ত কমিটির ৬ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে তাকে অব্যহতি দেয়া হয় বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। আর তদন্ত রিপোর্ট জমাদানে শেষ কর্ম দিবসে তদন্ত কমিটির আরেক সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী এস এম এস্কেন্দার আলী স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ও তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মোঃ নূরউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে প্রকৌশলী এস এম এস্কেন্দার আলী কম্পিউটার চুরির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন।
তিনি আরো জানান, আজ বৃহস্পতিবার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল হওয়ার কথা থাকলেও সেটি নানা কারণে সম্ভব হচ্ছে না। এই কমিটির মেয়াদ ও কলেবর বৃদ্ধির জন্য ভারপ্রাপ্ত উপচার্যের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সভাপতি ও আইন অনুষদের ডীন মোঃ আব্দুল কুদ্দুস মিয়া জানান, কাজের পরিধি বেশী হওয়ায় তদন্ত কমিটির কলেবর বৃদ্ধি ও আরো সময়ের প্রয়োজন। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত উপচার্যের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ঈদের ছুটির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির পেছন দিকের জানালা ভেঙে ৪৯টি কম্পিউটার চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত ১০ আগষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ড. প্রফেসর নূরউদ্দিন আহমেদ বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা করেন। গোপালগঞ্জ সদর থানার মামলা নং-২০।
গত ১৩ আগষ্ট ঢাকার ক্রিস্টাল ইন হোটেল থেকে চুরি যাওয়া ৪৯ টি কম্টিউটারের মধ্যে ৩৪টি কম্পিউটার উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় দুলাল ও হুমায়ুন কবিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে প্রযুক্তির সহায়তায় গোপালগঞ্জ ও নড়াইল থেকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী মাসরুল ইসলাম পনি শরীফসহ আরো ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গত ১৫ আগষ্ট গ্রেফতারকৃত ৭ জনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।এর আগে তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।