শত শত একর ফসলের মাঠ, ঝড়-বৃষ্টিতে নিরাপদ স্থানে দাড়ানোর জন্য, ক্লান্তিতে বিশ্রামের জন্য, পায়খানা-প্রশ্রাব করার জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান থাকা দরকার। দরকার একটি বড় খোলাঘর, একটি টয়লেট, একটি টিউবওয়েল, একটি প্রশ্রাবখানা।তাহলে কৃষকদের ঝড়-বৃষ্টিতে ভিজতে হবেনা, ক্লান্তিতে বিশ্রাম নিতে পারবে, পানি পান করতে পারবে, পায়খানা-প্রশ্রাব করার জরুরী প্রয়োজন মেটাতে পারবে। দিন-মজুরদের আর দুর্বিসহ কষ্টের মধ্যে সারাদিন মাঠে থাকতে হবেনা। গোপালগঞ্জের সাবেক জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানার এমন চিন্তা-ভাবনা থেকেই গোপালগঞ্জের বিল এলাকায় ফসলের মাঠে একটু উচু জায়গায় কৃষক শেড নির্মানের উদ্যোগ গ্রহন করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলার পাঁচ উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নের ফসলের মাঠে একটি করে কৃষকশেড নির্মানের লক্ষ্য নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে সদর উপজেলার উলপুর ইউনিয়নে একটি কৃষকশেড নির্মান করা হয়েছে।প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত উলপুর বিলের কৃষক শেডটি বৃহস্পতিবার(৯ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। গোপালগঞ্জের বর্তমান জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম কৃষক শেডটির উদ্বোধন করেন।
এসময় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহসিন উদ্দিন, সহকারী কমিশনার(ভুমি) মোঃ মামুন খান, উলপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কামরুল হাসান বাবুলসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
উলপুর এলাকার কৃষক আনোয়ার মীনা, রইসুল মীনা, মিল্টন মোল্লা জানান, এই কৃষকশেড নির্মান করায় তারা ব্যাপক ভাবে উপকৃত হবেন। তারা রোদ-বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক দৃর্যোগের সময়ে নিরাপদে থেকে মাঠে কাজ করতে পারবেন। প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময়ে তারা এই কৃষকশেডে আশ্রয় নিতে পারবে। এছাড়া রোদের মধ্যে না বসে এই শেডে বসে তারা তাদের খাবার খেতে পারবেন। পারবেন বিশ্রাম নিতে। এমনকি কারো বাথরুমের প্রয়োজন হলে তারা এখানে নির্মিত বাথরুম ব্যবহার করতে পারবেন। পানির ব্যবস্থা থাকায় কাবার পানিরও কোন সমস্যা হবে না। এটা তাদের জন্য আশির্বদ বরে তারা মন্তব্য করেন।আর এ জন্য তারা জেরা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম সংবাদকর্মীদেরকে জানান, কৃষক সারাদিন মাঠে কাজ করে অনেক কষ্ট করে ফসল উতপাদন করে।তাদেরকে নিরাপদে সুস্থ রাখা ও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া আমাদের কর্তব্য। প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময়ে, কৃষকের বিশ্রামের জন্য, ফসল মাড়াই করার জন্য, এক জায়গায় বসে খাওয়ার জন্য, পানি পানের জন্য, পায়খানা-প্রশ্রাব করাসহ কৃষকের বহুমূখী কাজে ব্যবহারের জন্য এই কৃষকশেড নির্মান করা হচ্ছে। এতে কৃষক ব্যাপক উপকৃত হবে বলে কৃষকরা আমাদের জানিয়েছেন। পর্যায়ক্রমে জেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নে একটি করে কৃষকশেড নির্মান করা হবে বলে জানান তিনি।